সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
Siegfried Sassoon এবং Wilfred Owen দুজনের মিল আছে, অমিলও। দুজনেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন সৈনিক হয়ে। ফলে দুজনেই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় জানতেন যুদ্ধ আসলে বীভৎসতা... সে অনুভব লেখা ছিল তাদের কবিতায়... রাষ্ট্রনির্মিত, আমাদের নির্বোধ পাতায় লেখা যুদ্ধের রোমান্স-রোমান্স গল্পের একেবারে বিপ্রতীপ সে অনুভব... ওনারা ভীরু ছিলেন তা নয় মোটেও; সাসুন তো বীরের মেডেল পেয়েছিলেন - দুরন্ত ঘাতক হয়ে নয়, বরং এক আহত সতীর্থকে গোলাগুলির মধ্যে দিয়ে বাঁচিয়ে এনেছিলেন, তাই; তিনি সৈনিক হয়েও যুদ্ধ থামানোর কথা বলতেন, তাই তাকে মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল উনি'শ সতেরোতে। সেখানেই আওয়েন ছিলেন, আমৃত্যু বন্ধুতা গড়ে উঠেছিল দুজনের। অমিল? তার আগে বলে নিই, আজ যখন রাষ্ট্র-নির্মিত যুদ্ধনিনাদে কানে তালা ধরে যাচ্ছে, বোধের ঘরে আগুনখেকো নির্বোধ, তখন ওনাদের কবিতা আরও বেশী প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে বলে মনে হচ্ছে; চলুন একবার, আরও একবার পড়ি কবিতা কেমন সত্যি আঁকে মর্মপাতায়; সমসাময়িক ততখানি যতটা সে চিরকাল ছুঁয়ে থাকে। আর বলা থাক, সাসুন বেঁচেছিলেন যুদ্ধের পরে অনেক বছর, আওয়েন মারা যান আর্মিস্টাইসের সন্ধির ঠিক এক সপ্তাহ আগে...
'হয়তো নিজেই চেয়েছিল জ্যাক নিজের এমন শেষ' চিঠি পড়ে অবশেষে
মা-বুড়ি এখন ভাঁজ করে তাকে রাখলো নিজের পাশে।
'কী চমৎকার লেখে কর্ণেল!' তবুও গলায় ভঙ্গুরতা
,ক্লান্ত স্বরের ধুধু অন্তরে মিশে থাকে শূন্যতা
মুখ আধো-তুলে তবু বলেছিল, 'আমরা মায়েরা গর্বিত এতো
আমাদের সব মৃত সেনাদের নিয়ে'; তারপরে মাথা নত।
বার্তাবাহক, সহসৈনিক, মন্থর পায়ে বেরিয়ে এলেন
বুড়ি মা'কে তিনি বলে এসেছেন মিথ্যার বীরগাথা
সে জননী তার বাকী দিনগুলো তাই নিয়ে কাটাবেন।
এদিকে কন্ঠে ছলনার আয়োজন, মা'র চোখে দীন ক্ষীণতা,
তবুও এখন শান্ত সে চোখ স্মিত আনন্দে দীপ্ত
কারণ তাহার আদরের জ্যাক আজ বীররসে সিক্ত
দূত তো জানতো, কাপুরুষ 'জ্যাক', পাক্কা হারামজাদা,
পরিখা গভীরে ছুটে পালাচ্ছিল ভয়ে একেবারে সাদা,
সে রাতে যখন ফাটল মাইন; কেমন সে জ্যাক চাইত সর্বদাই
ঘরে ফিরে আসতে; সে আর কখনো ঘরে ফেরে নাই।
ছিন্নভিন্ন দেহ পড়ে ছিল; কারও বেদনার কারণ হয়নি তা
সেই পাকাচুল, একাকিনী মা, শুধু তার বুক ঘিরেছিল শূন্যতা
আঁধার, অন্ধ গলিপথ ধরে গান গেয়ে ওরা চলে গেল,
স্টেশন থেকে দূরে ওদের ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকে;
লাইন করে উঠলো ওরা, কঠোর মুখ, উচ্ছলও
বুক তাদের ঢেকেছে সাদা ফুল এবং সুমাল্য
মৃত মানুষের শরীর যেমন ঢাকে।
কুলিরা তাদের নিস্পৃহ চোখে দেখে, শুধু এক ভবঘুরে
অপলক, সেই একা এ-যাওয়ায় দুঃখিত
ওরা চলে গেছে, শূন্য শিবির আশ্রয়হীন পড়ে।
এরপর জ্বলে নিরাবেগ আলো, সিগন্যাল নড়ে,
এইবার ট্রেন ছাড়বে সুনিশ্চিত।
এতই গোপন, যেন চাপা-দেওয়া অন্যায়, ওরা চলে গেল;
ওরা আমাদের কেউ ছিল না:
আমরা জানিনা কোন যুদ্ধের মাঠে ওদের পাঠানো হলো
নারীদের সেই ফুল প্রার্থনা পরিহাসে ঝরে গেল
কিনা, সেকথা কখনো আমাদের কাছে আসে না
ফিরবে কি ওরা ঘন্টাধ্বনিতে, উৎসব উল্লাসে
বোঝাই ট্রেনে, হর্ষমুখর গানে?
খুব নগণ্য, যারা আসে আলোকে প্রকাশে...
অল্প ক'জন আদৌ যদিবা ফেরে, ফেরে তারা গ্রামের কুয়োর পাশে
ক্ষতবুক, মূক, তাহাদের একাকী উঠোনে