সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
দুঃখ পেতে হয়,
খুঁড়ে দেখতে হয়...
ওই-যে কথক, ফুরনো গল্পের
ওই-যে ঊষর মরু-বালক
ওরাই জানে, ওরাই শুধু জানে ---
হৃদয় যদি পাখির বাসা হয়
খাদ্য তবে অমিত সঞ্চয়...
খুঁড়ে দেখতে হয়
চোখের তারায় ক্লান্ত বিকেলঘর
সন্ধে মানেই মরানদীর সোঁতা,
চাওয়া এবং ভুলে যাওয়ার
মাঝখানে বয় খরস্রোতা
ইচ্ছেগুলো, ওদের গায়ে ধুলো,
স্রোতের টানে আবারো ঘর ভাঙলো?
পাঁজর-বেড়ার ভেতর-উঠোন
এখনো জলমগ্ন?
হাত খুঁজছে আঁকড়ে ধরার হাত,
জল বাড়ছে, জল বাড়ছে শুধু
আমার তবু নৌকাডুবির ভয় --
দুঃখ পেতে হয়
খুঁড়ে দেখতে হয়
বিশ্বাস করুন, প্রভু
আমি আপনার সবকথা বিশ্বাস করি
আমি জানি, জিভ আসলে
ভক্তিগানে নেচে ওঠার একান্ত লেজ,
প্রতিটি মৃত্যু আসলে পরিযায়ী--
খানিক জিরোচ্ছে শুধু আমার এ-ঘরে;
অথবা সবই কর্মফল, গীতায় আছে,
সবই আমার দোষ
আমি জানি, আপনার মৃদু হাসি
আসলে ছুরির ফলার মতো নিষ্কলুষ, সাদা...
আমি নিশ্চিত জানি
কাঁসর-ঘন্টার আওয়াজে হাহাকার ঢেকে যায়,
মোমের আলো আপনার মুখে পড়লে
নেপথ্যে যে ধাতব শৃঙ্খল বেজে ওঠে --
সে আমার শোনার দোষ
আমি বিশ্বাস করি
আপনার প্রতিটি কথা আপনিও বিশ্বাস করেন;
দুঃখ কিসে যায়
সে-মন্ত্র আপনিই বলে দেবেন সময় হলে;
আমি তো জানি
মৃতদেহ আগুনে দিলে মাংস-পোড়া গন্ধ নয়,
বাতাসে ভাসে আত্মার অবিনাশী সৌরভ
তবু, প্রভু, এই দারুণ ঝড়-ঝঞ্ঝার সময়
বাইরে বেরোবেন না বেশী --
যদি সাজ খসে যায়..
লকডাউন উঠে গেলে
প্রতিটি ব্যর্থ পদচিহ্নে আবার শিশুঘাস জন্মাবে--
যেখানেই যাই, এবার তোমাকে সঙ্গে নিয়ে যাব
লকডাউন উঠে গেলে
ঐ যে দেহটা আর্তনাদের মত ভেতর থেকে ফেটে
ছড়িয়ে আছে পাথর পাথর পথে--
সে আবার ‘আমি’ হয়ে উঠে
এক দুপুরে ঠিক এসে দাঁড়াবে তোমার দুঃখবটের নীচে
নতুন চানাচুর প্যাকেটটা ভাঙবো লকডাউন উঠলেই
লকডাউন উঠে গেলে
আমি আর ঝড়কে ভয় পাবো না কক্ষনো;
বৃষ্টিতে ভিজবো হাপুস, নদী হয়ে যাব,
আমার রুপোলি সাঁতার দেখে হাততালি দিলে
ভাসানের দিনে তোমাকে সুগন্ধী সন্ধ্যা এনে দেব...
লকডাউনের পর আবার
কুকুরের উল্টোনো মাড়ির মত আমপাতা বেয়ে
চাঁদের যে অশ্রু নামে ক্ষুধার্ত মাটিতে,
আমি তাকে আলো জেনে মরে যাব
লকডাউন উঠে গেলে মনখুলে কাঁদবো আবার
নিজেকে অজেয় ভেবেছিলে তুমি!
তুমি তো জানতে,
মানুষের সাধ্য নেই তোমাকে ছোঁওয়ার...
ভেবেছিলে, অরণ্যকে যত দূরে ঠেলে রাখা যাবে
ততদূর জীবনের সীমানা তোমার।
দুর্ভেদ্য করেছো দুর্গ!
এত উঁচু প্রাসাদ তোরণ, এত দাস-দাসী--
একমুঠো দানা ছুঁড়ে দিলে
মাদল ও কৃপাণ হাতে ছুটে যেত অরণ্যের দিকে!
তারা কেউ পথে নেই আজ।
আজ শুধু অরণ্যের দিন;
শুনশান, নিশিত পথ বেয়ে
উঠে আসছে ধীরে নগরের বুকে...
জন্মদাগ মুছে দিয়ে কুচিকুচি উড়িয়েছো যাকে,
আজ সে বৃক্ষের বল্কল
পথ শেষ, ম্যাকবেথ;
অস্ত্রের তমসা ছেড়ে, উল্লাস নিভিয়ে,
নেমে এসো মাটিতে, নতজানু হও,
মার্জনা চাও...