সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
এই নদীটার কথাই আমার মন থেকে মুছে যায়নি। অন্যান্য অনেক নদীই আমি বিভিন্ন সময়ে দেখেছি। কিন্তু এর মত কেউ নয়। এর সঙ্গে আমার যত কথা। কোথায় যেন ছোটবেলা থেকেই ওর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। আমার দেশ বাড়ি আসার পথে এই নদী পেরিয়েই আসতে হতো।
তখনও রাস্তা ঠিক ঠিক গড়ে ওঠেনি। যাতায়াত গরুর গাড়িতে। নদীতে সাঁকো ছিল না। গরুর গাড়ি নদীর একধারে এসে থেমে যেত। আমরা নেমে পড়তাম। তারপর গরু সহ ওই গাড়ি নদী পার হত। আমরা পিছন দিক থেকে ঠেলতাম। তারপর আস্তে আস্তে গরুর গাড়ি উঠত পাড়ে। ঠাণ্ডা নদীর জল। কোথাও বা নিচু গর্ত। খুব সাবধানে নদী পার হতাম। সাইকেল কাঁধে নিয়েও কেউ কেউ নদী পার হত।
এ গ্রাম সে গ্রাম ঘুরে নদী আসে - মেশে কাঁসাই নদীতে। আবার কাঁসাই থেকেই বের হয়েছে এই নদী, মানে কাঁসাইয়েরই উপনদী। আমরা একে পারাং বলেই চিনতাম। মিষ্টি নদী, শীতল ও স্বচ্ছ জল। বছর ভর নানা ফসলের চাষ, নদীর আশেপাশের ক্ষেত জুড়ে। শ্যালো না আসা অব্দি সেচ কাজে এই নদীর জলই ব্যবহার হতো। অনাবৃষ্টিতে তো এই নদীই একমাত্র ভরসা।
পৌষ মাস। মাঠে মাঠে ধান কাটার পালা চলছে। মুনিষরা মাথায় করে ধানসহ খড়ের আঁটি বয়ে নিয়ে আসে। বাড়ি বাড়ি খড়ের গাদা। আর কদিন পর ইতু সংক্রান্তি। বাড়ির উঠান নিকানো হবে। ধান ঝাড়ার কাজ চলবে। তারপর চলবে ধান কোটার কাজ। ঢেঁকিতে। লোকজনের হাতে পয়সা আসবে, নতুন জামা কাপড় কেনা হবে। শীতলা মার মন্দির প্রাঙ্গণে মেলা বসবে।
পারাংয়ের জলে ইতু সংক্রান্তির ভোর থেকেই কোলাহল। স্নান পর্ব। নদীতে গ্রামবাসী পূজা দেয়। নতুন চাল, আম দুধ দিয়ে মাখা হয়। গোল ঘরে, ধান মাড়াইয়ের জায়গায় চালগুঁড়ির আলপনা। পূজা পায় বকনা মানে এঁড়ে গরু। সে এক অনাবিল আনন্দ। বিকেলের দিকে কলাগাছের ছোট ছোট খোলাতে ধানের শিস, নতুন চাল মাথায় নিয়ে গ্রামের মেয়েরা নদীর পথ ধরে, আমিও চলতাম তাদের সঙ্গে, পারাং নদীতে খোলা ভাসান হবে। শীতের বিকাল, সূর্য তাড়াতাড়ি পশ্চিমে হেলেছে। পারাংয়ের ঠাণ্ডা জল, মৃদু বাতাসে ঢেউ উঠেছে। একে একে ইতু ভাসান হল- খোলা চলল নদীর হালকা স্রোতে। কেউ কেউ আঞ্চলিক গানও গেয়ে শোনায়। কত আনন্দ আমার নদী ঘিরে।
অন্ধকার নামে। নিস্তব্ধ জনপদ। শীতকাল। এধার ওধার হারিকেনের আলো জ্বলে। বাড়ি বাড়ি পিঠা গড়া শুরু হয়। আমরা ছোটরা তখন কোনো খড় গাদায়, খড় দিয়ে ঘর বানাতাম। একটু দূরে থাকত হারিকেন আর বালতি ভর্তি জল। প্রহরে প্রহরে শেয়াল ডাকলে, ধান মাড়াই স্থলে জল ছড়া দিতাম গোল করে। তারপর গভীর রাতে ঘরে ফিরে পিঠে খাওয়া। পারাংয়ের ধারেও জল ছড়া দেওয়ার এই লোকাচার চলে রাত জুড়ে।
এঁকে বেঁকে নদী একের পর এক পাড়া টপকে গোটা গ্রাম প্রদক্ষিণ করে প্রবাহিত হত। তার কোল ঘেঁষে কোথাও বড় বড় জঙ্গল কোথাও বা ঝোপঝাড়। শীতকালে আমরা আসতাম বনভোজনে। জঙ্গলের কাঠে রান্না, নদীর ধারে বসে ভাত তরকারি খাওয়া আর জল বলতে তো ওই নদীরই জল। বৈঁচি ফুল, লাল টোপাকুলের ঝাড় নদী কূলে।
বড় গাছের ছায়ায় কোথাও কোথাও নদীর ধার অন্ধকার। মানুষ মারা গেলে এখানেই পোড়ানো হয়। দেখে ভয় লাগত। একেই মৃত মানুষের দাহ স্থান তার ওপর গাছের ঘন কালো ছায়া। ওইখানেই তো একানড়ে থাকে। একটা বুড়ি। প্রেতাত্মা। এই জায়গা পেরিয়ে আমায় গ্রামে আসতে হত। সে কি ভয় আমার!
বর্ষাকাল। কখনো ধীরে কখনোবা মুষলধারে বৃষ্টি। নাগাড়ে ক’দিনের বৃষ্টিতে মাটির বাড়িতে জল ঢুকেছে - মাটি আলগা করেছে। এদিকে পারাংয়ে জল বাড়ছে। দু কূল ছাপিয়ে জল। মাঠ ভরে গেছে জলে। পুকুরের জল উপচিয়ে রাস্তায়। কিছুদিন আগে গাঁয়ের মানুষেরা শলা করে নিজেরাই শাল খুঁটির সাঁকো তৈরি করেছে। গ্রামের বাচ্চা বুড়ো সবাই শ্রম দিয়েছি। অতিবৃষ্টিতে সেই সাঁকোটাও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। সদর মেদিনীপুর থেকে কোন নিত্য প্রয়োজনীয় সওদা আসতে পারছে না। সাঁকোটা এখন এতই নড়বড়ে যে গরুর গাড়ি পড়ে যাওয়ার উপক্রম। পারাংয়ের এরকম অশান্ত রূপ আগে দেখিনি। যেসব গ্রামের ওপর দিয়ে পারাং গেছে সেখানে বানভাসি মানুষের করুণ অবস্থা। কাঁসাইয়ের জল পারাং নদীকে ভরিয়ে দিয়েছে। নদী অশান্ত। সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে, ধানের বীজতলা ডুবে আছে। মাছ ভেসে গেছে। পারাংয়ের ধারে বামুনপাড়া, কুশপাতা, অভির্জুনি গ্রামের অবস্থা আরো খারাপ।
গরমের ছুটি আর শীতের ছুটিতে আমি দেশে আসতাম। অনেক বছর ধরে। পারাংয়ের এই রূপ, আমি আগে দেখিনি। নড়বড়ে সাঁকোটাও ক্রমশ হেলে পড়ল। নিচে নদীতে ঘটিবাটি ভেসে যায়। বামুনপাড়ার অত বড় প্লেগ্রাউন্ড জল থৈথৈ। নদী পারাপার বন্ধ।
এই অঞ্চলের ডাক অফিস আমাদের বাড়ির বারান্দায় বসত। ময়না কাকা ডাকহরকরা। কোঁকড়া চুল তার, শ্যামলা গায়ের রং, ছিপছিপে গড়ন। হাঁটুর ওপরে ধুতি আর গায়ে ফতুয়া। হাতে ঘুঙুর বাঁধা বল্লম আর পিঠে ডাকের বস্তা নিয়ে ১৫ কিমি রাস্তা পেরিয়ে ডাক পৌঁছাত। ফিরত পিঠে নিয়ে। এ ছবি নিত্যদিনের। এবার ময়না কাকা আসছে না। ডাকঘরে বেলা ৩টে-৪টে অব্দি কাজ চলত। চারদিকে জল কমেছ, ময়না কাকার দেখা নেই। সবাই অপেক্ষায়। এরই মধ্যে একজন এসে খবর দিল, ময়না পারাংয়ের চোরা স্রোতে মারা গেছে। গাঁয়ের লোকজনই ডাক বস্তা আর লাঠি উদ্ধার করে নিয়ে এল, সঙ্গে ময়না কাকার দেহ।
সেবার জল নামলেও পারাংয়ের গভীর জলের চোরা স্রোত, আরো অনেককে ডুবিয়েছিল। ডুবে গিয়েছিলেন বামুনপাড়ার আশু ঠাকুর। বামুনপাড়া ছিল নদীর অপরপ্রান্তে। নদীর জল কমছে দেখে বামুনপাড়ার পুরুত ঠাকুরেরা নদী পেরিয়ে যজমান বাড়ি যাওয়া শুরু করলেন। এমনি একদিন আশু ঠাকুরও নদী পেরিয়ে রওনা দিলেন আমাদের গ্রামের উদ্দেশে। অনেকেই বারণ করেছিল, বলেছিল ঠাকুরমশাই যাবেন না, নদীতে এখনো ভালোই টান। কিন্তু পেটের টান তো আছে! সেই টানেই আশু ঠাকুর শালগ্রাম শিলা হাতে নিয়ে, হাত ওপর করে নদী পার হতে গিয়ে হঠাৎই ডুবে যান। ডুবন্ত মানুষটি কিন্তু শালগ্রাম শিলা হাতছাড়া করেননি। মৃত মানুষটিকে উদ্ধার করা হয় অনেক সময় পরে। উনি আমাদের বাড়ি আসতেন প্রতি বৃহস্পতিবার। দূর থেকে দেখতে পেলেই - ঠাকুর মশাই আসছে বলে আমরা চিৎকার করতাম। মা ঠাকুমারা জল ছড়া দিয়ে ঠাকুর মশাইকে স্বাগত জানাত। তিনি আর ফিরবেন না!
শীতকালে জমা জলে আমি নদীর খাত ধরে বহু দূর চলে যেতাম। ভয়ও লাগত। ডুবে যাওয়ার ভয়। তারপর আবার চলা। এইরকমই একবার গ্রামের ধীরু কাকার সঙ্গে নদী পেরিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিলাম, হাঁটা পথে, কাঁসাইয়ের দিকে, যেখানে পারাং মিলিত হবে কাঁসাইয়ে। কাকা আমাকে কাঁধে নিয়ে ওই নদী পেরিয়েছিল, জল সেখানে আরো গভীর।
ধীরু কাকা ঢাক বাজাত। গরুর চামড়া শুকিয়ে ঢাক ছাইত। একই সঙ্গে কাকা পালকি বেহারাও ছিল। লম্বা কালো চেহারা ধীরু কাকাকে গ্রামে নররাক্ষস সাজানো হত। নররাক্ষসকে দড়ি দিয়ে বাঁধা হত, তারপর গায়ে কী সব জল ছেটালে ধীরু কাকার রাক্ষস রূপ জেগে উঠত। কাঁচা মুরগি খেয়ে ফেলত। চোখ লাল জ্বলজ্বল করত। তারপর ওই দড়ি বাঁধা অবস্থায় টানতে টানতে পারাংয়ের জলে চোবানো হত। কাকা শান্ত হত। নদী কাকাকে শান্ত করত।
বন্যার জন্য সেবার নদীর ধার বরাবর কাশফুলের চাদর বিছানো দৃশ্য দেখা গেল না। আনন্দময়ীর আগমনী ঢাকের শব্দহীন অঞ্চলে লক্ষ্মী পূজা বন্ধ। মাঠে ধান নেই কিন্তু নবান্ন তো মানুষের মনে রয়ে গেছে। সাঁওতাল পল্লীর ছেলেরা তাদের বাঁধনা পরবে নদীর ধারে এবার জমা হল না তীর ছোঁড়া উৎসবে। জমি কাদাময় - তাই কলা গাছ না পোঁতা গেলে তির খেলা হবে কি করে?
পারাং এখন শান্ত। তবে সেই পোড়ামাটির শিব মন্দিরটা বন্যায় একেবারে ভেঙে গিয়েছে। বহুদিনের মন্দির। নদীর ধারে সে বহুদিন ছিল। এই অঞ্চলে ওই একটি পোড়ামাটির মন্দির। অনেকদিন আগে থেকেই মাটিতে বসে যাচ্ছিল। জীর্ণ সে - গাঁয়ে অশ্বত্থ আর বট বাসা বেঁধেছিল। ইট সব ভেঙে ভেঙে পড়ছিল। এখন সে বিলীন। শুভ কাজে মন্দির ব্যবহার করত গাঁয়ের মানুষজন। ইতু ভাসানের সময় ঘটা করে পূজা হত।
এসব গত শতকের সাতের দশকের কথা। তারপর ইউনিয়ন বোর্ডের তদারকিতে সরকার থেকে পারাংয়ের বুকে ৬ থামের কংক্রিটের সেতু তৈরি হয়েছে। যাতায়াত, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটলো। সেতুতে মোটরগাড়ির চলাচল হতে লাগল। অনেক নতুন দোকানপাট গ্রামে বসল, নতুন নতুন পসরা নিয়ে।
আগে গ্রামে একটিই হাট ছিল। শুক্রবার বসত। নদীর ওপার থেকে বহু লোক আসত বেচাকেনা করতে। আমার ছোটদাদুর কাপড়ের ব্যবসা ছিল। গরুর গাড়িতে কাপড়ের গাঁটের সঙ্গে আমিও চলে আসতাম ওই হাটে। ছোট্ট হাট কিন্তু জমজমাট। নদীর ধারে, ছোট ছোট ছাউনিতে, কাপড়ের দোকান, জুতোর দোকান, কামারশালা, চপ তেলেভাজা, মিষ্টির দোকান, গোটা মসলার কারবার। দেশি মুরগি, তির ধনুকও বিক্রি হত। আরো ছিল চিঁড়ে, মুড়ি, কদমার দোকান। আর নদী দিয়ে আসত মাটির হাঁড়ি মালসা। সব কিছুরই দোকান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাট হারাল তার জৌলুস। ক্রমে ক্রমে হাট গেল উঠে। শহর গ্রাস করতে শুরু করলো আমার গ্রাম।
এখন আমি কলকাতায় - গ্রামের স্মৃতি নিয়ে। আর্ট কলেজে প্রবেশের ফলে গ্রামে যাতায়াতও অনেকটাই কমল। এখানকার গঙ্গার ধারে বসলে দেশের আমার ছোট্ট নদীর কথাই মনে ভেসে ওঠে। কলেজে থাকাকালীনও বারবার আমি গ্রামে ছুটে যেতাম। ছবি আঁকতাম। গ্রামের সেই ছোট্ট নদী, মাঠ ,ঘাট, প্রান্তরের ছবি। মানুষের ছবি। সেখানকার কাজ দেখতাম। কারিগরেরা হাতি, ঘোড়া, লক্ষ্মী, গণেশ পট, মালসা হাঁড়ি, প্রদীপ বানাত। এখানকার মাটিতে বালির প্রভাব বেশি। পোড়ামাটির কাজ বেশ ভারী ছিল ওজনে। নদীতে তালগুঁড়ির ডিঙ্গি চলাচল করত। বর্ষাকালে লোক পারাপারে ডিঙিই ছিল একমাত্র ভরসা। তারপর তো পাকা সেতু তৈরি হল। সে সময় নদীতে বাঁধ পড়ল। রুঙরুঙির বাঁধ। এইখানে ২/৩ ঘর চিত্রকর ছিল। ছোটবেলায় এদেরকেই দেখতাম, পট ঘুরিয়ে মানিক পীরের গান করতে। পরের দিকে এরাও হারিয়ে যান। আর বাঁধ আর সেতুর মাঝে পড়ে পারাং হারায় তার প্রবাহ, আমার নদী ক্রমশ ক্ষীণ হতে লাগলো।
সরাসরি যোগাযোগ কমলেও, যোগাযোগ থাকত চিঠিতে। এমন এক কালসময়ে দেশ থেকে একবার চিঠি পেলাম,‘তুই এখন এখানে আসিস না। এখানকার গ্রামের অবস্থা খুব খারাপ। দলাদলির লড়াই চলছে। মূল সড়ক পথের রাস্তা কেটে দিয়েছে লোকজন। এমনকি পারাংয়ের সেতুর দু’পাশ দুই দল দখল করে রাস্তা কেটে দিয়েছে। লোক চলাচল, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস শহর থেকে আসা প্রায় বন্ধ। শুধুই লড়াই। কখনো সখনো লাশ ভেসে যায় নদীতে। গোলাগুলির শব্দ সবসময় শোনা যায়। আমরা চিঠি দিয়ে জানাব কবে আসবি।’
এর অনেকদিন, প্রায় তিন বছর পর আবার দেশে গেলাম। সামনে পারাং। ওকে দেখে ভারী কষ্ট হলো। আমার নদী প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে। ২/১ দিন পর পায়ে পায়ে নদীর ধারে এলাম। আমার ছোট্ট নদী থামের আঘাত আর বাঁধের চাপে দীর্ণ। নদীর মাঝখানে জল নেই। সেতুর নিচে মাঝখানটায় চরা। জল প্রবাহিত হয় নদীর কোল ঘেঁষে। নদী খাত ধরে আমি হাঁটতে থাকি। যতদূর চোখ যায় নদী শুকিয়ে গেছে। গরু-ছাগল চরছে নদীতে - জল নেই। ছোটরা শুকনো খাতে সাইকেল চালাচ্ছে। মাছ, সাপ, গেঁড়ি গুগলি উধাও। পারাংয়ের মৃত্যু তবে কি আসন্ন? পারাংয়ের রূপটাই নেই। সে তার যৌবন হারিয়ে প্রৌঢ়ত্বের শেষ সীমায়! গ্রামের মানচিত্রেও এবার হারিয়ে যাবে আমার পারাং যে কোন একদিন।