সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
আট
আড়মোড়া ভাঙতেই পুরোনো কফিন চৌচির। বাঁচতে চায় বলে মৃতরা যে যার লাশ আর লাশ গুলো মাপ মত পায়জামা খুঁজে ঢুকে পড়ল তার ভিতরে।এতদিনের ঠান্ডা শরীরে উত্তাপ ফিরছে দেখে মমি রক্ষনাবেক্ষনে যারা ছিল তাদের অনির্দিষ্ট কাল ছুটি ও ব্যাজার মুখ।
কতকাল পরে এরা বাঁচতে শিখছে দেখে পলাশ আরো লাল হল। কেউ দেখেনি। পাখি’রা বহুদিন বাদে গানে ফিরলো। কেউ শোনেনি। আকাশ আরো নীল, উঁকি দিল কৃত্তিকা। বাঁচবে বলে এ শহর ভুল উল্লাস ছেড়ে উড়াল দিয়েছে ছায়াপথে। আকাশগঙ্গায় ভেসে যাচ্ছে পুরোনো পালক।
নয়
এ একটা ভাঙাচোরা ক্যারাভান অথবা নূহের নৌকো। মরুসমুদ্রে ঝড় নেই, বৃষ্টি নেই। উথালি পাথালি নাও বুক চেপে উগরে দিচ্ছে ভয় আর শ্বাসকষ্ট। অকরুণ আগুন পুড়িয়ে দিচ্ছে চোখ, চুল, পায়ের পাতা আর হিমস্রোতে কুঁকড়ে যাচ্ছে কেউ। ক্লান্তিহীন উজানে চোখে জুড়ে ইঁদুরের মৃত্যু ভয় অথবা আরারাত পাহাড়। ফ্যাসফ্যাসে শুকনো গলায় ঈশ্বর ও তার দালালদের অভিশাপ দিযে লুটিয়ে পড়লো কেউ। ওরা হাঁটছে। পায়ে পায়ে ধুলোমেঘ। কতকগুলো চলমান ধুলোমেঘ আরারাত পাহাড়ের খোঁজে সারারাত্রি হেঁটেছে। নষ্ট বলতে কয়েকটা ইঁদুর।
দশ
একঘেঁয়ে লাশ ছেড়ে বেঁচে নিতে ইচ্ছে হলে পুরাণের গল্পগুলো জড়ো করি। ক্রমশ স্বাগতোক্তি’র মত বিলম্বিত আলাপ এবং ক্রমউন্মোচন যেমন ঘরানা। এসময় সপ্তডিঙ্গা ক্ষণিক উদ্বেল, অদূরেই লাশ ফুঁড়ে কমলে কামিনী আর বাঘিনীও নেমে এল হাতানিয়া-দোয়ানিয়া জলে।
আমিও সওদাগর। ষোল আনা সাঁতরে ডিঙা সামলে উঠে আসি পুরোনো লাশের পাশে। বাঘিনীও জল মুছে পুরোনো ডাঙায়।
এগারো
এখানে পুরাণ কথার মাঝে অনন্ত স্পেস। সেসময় শীতঘুম। পলেস্তারা মেরামতি। কফিনের দেওয়ালে সদ্য রঙ। “বিজ্ঞাপন মারিবেন না” ঘুম বিজ্ঞাপন জুড়ে গুটখা হিংসে। স্বভাবত অনিদ্রা জুড়ে জান্তব ক্রোধ আস্ফালন, অস্থির ভ্রম-অমনিবাস আর ঘুমবড়ি।
এরকম অসংখ্য মহড়া শেষে যদি ইচ্ছে মৃত্যু চাই কথক ফিরে আসে, ফিরে ফিরে আসে পুরাণের গল্পগাছা নিয়ে।
শীতঘুম ফেলে আরো একবার বেঁচে উঠি।
বারো
শেরিফের নির্দেশ মত অবন্তী নগর কুকুর কুন্ডলী। তার বগলে, তলপেটে, নিতম্বে, ক্লিভেজে যে যেমন হরিপদ আর মফিজুল আর রামা কেওড়া কুন্ডলী পাকিয়ে ঘুমোতে যাবে।এসময় তাদেরও বগলে, তলপেটে, পাছায়, প্রোস্টেটের নীচে উসখুস অথবা তাদের ছা’য়ের মা-পুতের অসাধ্য কুলকুন্ডলীনি সাধন। সে কারনে চুলকুনি বশত একটু নড়াচড়া, সে ধাক্কায় অবন্তী নগর কেঁপে উঠলেই হাতের তালু নিবাসী স্ফিঙ্কস হাঁক দেয়, খামোশ……
তেরো
বহুদিন পর জুলুস বেরোবে আজ, পুরোনো পায়জামার বেয়াদবি ছুঁড়ে সবার নতুন পাতলুন।
দাঁতাল পাহাড়ের দিক থেকে বাহার যাত্রা যাবে বাস্তু দেবতার আনখ বিগ্রহের দিকে।
মাংসাশী পাতলুনের আজ অন্তিম নিরামিষ দিন, বাহার যাত্রা।
ক্ষুধার্ত বাঘের কাল থেকে হিসেব বরাবর।
চোদ্দ
এই সেই মহাজনপদ নীল বাল্বের নিচে শুয়ে ছিল।
এই সেই মুখোশ ওয়ালা পিঁপড়ে যারা নীল বাল্বের নীচে তৈরি করেছিল এই মহাজনপদ
এই সেই নীল বাল্ব এই মহাজনপদকে ওম দিত দুধনদীর ধারে।
এই সেই দুধনদী, অভিমানী সরিয়ে নিয়েছে মহাজনপদ থেকে বহুকাল আগে।
এই সেই অভিমান মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল নীল বাল্ব থেকে।
এই সেই নীল বাল্ব ক্রমশ নিভিয়ে দিয়েছিল মুখোশ ওয়ালা পিঁপড়ের আঁচ।
এই সেই মুখোশ ওয়ালা ঠান্ডা পিঁপড়ে যারা তৈরি করেছিল এই মহাজনপদ।
এই সেই মহাজনপদ, আজ শুধু শৈত্যপ্রবাহ।
এই সেই শৈত্যপ্রবাহ......।