সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
আলো পশ্চিমে সরে এলে মনে হয়
কতো কথা বাকি রয়ে গেলো এবারও
বেলা বাড়লেই ওরা আসে!
ভিখারী থালায় মাছভাত
যথাযথ আলু দিয়ে, ঘাম মুছে,
দুফালি পটল আরও--
'খা! খা! আমাকেও খা!'
এরপর রীণাদিরা ফিরে যায়--
ঘরে লোকটার বুকের হাপর, মেয়েটাও
ফিরে এলো কিছুকাল হলো,
নাতিটা কাঁদে সারাক্ষণ...
রীণাদির ব্যাগে রুটি নাকি লুকোনো পশম
সে কাহিনী কথারা জানে না...
কথা কি কবিতা বলে? সে নির্ণয়
বাকি রয়ে গেলো এই গরমেও
সব পথ খুঁড়তে নেই-- কোথাকার ধুলো
উড়ে এসে কোথায় মিলায়; মেলাশেষে
ভীড় ফিরে গেলে কার চোখ ভিজে,
কার ঘরে ফুটিফাটা জৈষ্ঠমাটিতে
গরম অধিক বলে বীজের নরম ফেলে যায়,
শব্দরা জানে, সেইসব দহনের কথা?
পাগলিটা এই গরমেও হাসছে...
লেখা যায় ওর কৌতুক, গর্ভ-আগুন,
ছেঁড়া অক্ষরে?
নাভি কেটে গেলে ফুটপাত হাসে শ্বদন্তপাথরে
রাতে শব্দের ঘুম পায়, তাই রাত্রি হয়
সকালের শিফটে শব্দেরা বদলে যায়...
ফ্লোর ম্যানেজার লিখে রাখে কার কী ডিউটি
কোন শব্দ কোথায় আওয়াজ দেবে,
কে স্যালাইন দেবে
কারা বলে দেবে সুস্থতা মানে
কতরক্তচাপ, আর ভোলামাছ, ঝোল
কতটা সাঁতরে গামলার কানা ধরে ভেসে ওঠা যায়,
বিড়ালের জিভচাটা দেখলেই
কোন দরজা বন্ধ করতে হয়...
এতো ঘুম, এপাশওপাশ, শব্দরা জানে না
শব্দকে সব বলা যায়?
বলা যায়, লুকোচুরি খেলাশেষে বৃষ্টি না এলে
এতো নষ্ট হতো? এতো ঘাম, ইয়াসিন,
জ্যোৎস্নায় ফলাতো?
ঝর্ণা কলম হারিয়ে গেলে কুঞ্জবনে
স্বপ্নে দেখা শব্দ খাঁচায় আমরা কজন বন্দী
একজন তার দাঁড়ের গোড়ায় খাবার পায়
অন্যরা সব দুলতে থাকে বিম্ববতীর মনে...
কটাক্ষময় ফন্দি,
জলের পাশে লক্ষ্মীসোনা সেলফি পোস্টায়---
এই অব্দি শব্দদের ভরসা করা যায়
আসলে শব্দ শব্দখোলস, আর কিছু না;
ভিতরে সাপ, চেরাজিভ, শিকার এবং ক্ষুধা
খাদ্যও শুধু ছেঁড়ামাংসের সঞ্চয়
সব শিকারীর ব্রাত্য হবার ভয়
শিকার-শিকারি বনে, সব ঘ্রাণ বেসামাল;
শব্দের কোনও গভীর উঠোন নেই, তাই
প্রতি শব্দই একে অন্যের ছায়া,
একটা শব্দ দীর্ঘশ্বাস, ভুল মাঠ, মরাফুল
অন্য একটি সন্তানসম, ছাড়িনি কখনো
ওর আবাসন-মাঠ পেরোনো বারণ...
পাঁচিলের পারে ছোটলোক শব্দরা থাকে;
শব্দরা জানে না কীভাবে পাঁচিল পেরোতে হয়
তবু আছে জানি ঝুলন-কাঠের সেতু এক,
সেই পথ বেয়ে
ঝোরাবুক শব্দেরা শব্দ পেরিয়ে যায়
পুনর্জন্ম চায়... যারা পায়
ওরাই কবিতা হয়, বাকিরা নিষাদ
এতো চাইলে হয়?
আমি তো সব কথা
রাখিনি, সঞ্জয়...
এই যে চলে যাওয়া,
আঁকড়ে থাকা জন্মজীবন
উপুড় করে দেওয়া
বিন্দু বিন্দু সবই
পাতার ছল, বৃষ্টিজল
চোখের পাতায় ছবি
ছবিকে কেউ চেনে?
ওর ভিতরেই লুকিয়ে অশ্রুপাত
ডানার ভাঙন মেনে
রহস্যময় খেলা--
এই আমি তার সেই আমিতে যাই
এখনই, এইবেলা
বলেছিলাম, থাকবো...
যেই দেখি সেই নদীর জল
পাড়কে বলি, ভাসবো
ভেঙে পড়লেই হয়...
জলের পরমায়ু,
বৃষ্টি এলেই ভয়!
এই শ্রাবণেও, ভিজছি
ভিজবো বলে বৃষ্টি আসে-
রেখার কাছে শিখছি
রেখা এমন মায়া,
পাড় ধরে গান অস্তে গেলেই
ছবির বুকে ছায়া
সে ছায়া খুব জ্যান্ত;
আগুন যদি জানতো এতো
আর ক'টা দিন মানতো
ছদ্মবেশে আছি, তাই তুমি
শত্রু ভেবেছো...
আসলে তোমারই মতো আছি,
যত ফুলরেণু ঝরে যাক সন্ধ্যায়
যত রঙ হাড়ের কোটর ফুঁড়ে
লাল করে দিক মাটি,
উদাসীন হয়ে আছি, বেশ আছি
ভালো আছি খুব,
এখন আর সহজে জল আসে না;
মিউনিসিপালটিকে দোষ দিই,
চ্যানেল পাল্টাই শুধু
নায়িকারা হাসলেই হাসিখুশি খেলি
সব নায়কের আমি ডাকনাম জানি
'কাজ আছে' প'রে থাকি তাই
দোল এলেও বসন্ত মাখি না আর;
আপাতত বুঝে গেছি রঙে রঙ
চুপিচুপি মিলে গেলে ভালো;
গাছ খুন হলে পকেটে ফাগুন লাগে
নেতাদের, হুজুরে হাজির দিলে
আমারও খানিক মেলে চুপ থাকলেই
বৃষ্টিতে জল জমে তো জমুক
আমার এখন দোতলায় বাস;
ফড়িং ফড়িং খেলা, জমানো সবুজ
ফুরিয়ে গিয়েছে, তাই
ছেলেকে এখন ঘরে প্রাণীবিদ্যা পড়াই
'ভালো আছি' প'রে আছি তাই
দিগন্ত সুদূর যতো ততদূর
মশারি টাঙাই...
ছদ্মবেশে আছি, তাই তুমি
বন্ধু ভেবেছো...